প্রশ্ন: আমাদের দেশের অনেক মসজিদে দেখা যায় রমজান মাসে তারাবি পড়ানোর জন্য হাফেজ নিয়োগের ঘোষণা করা হয় এবং হাফেজ সাহেবদেরকে জমা করা হয় ...
প্রশ্ন: আমাদের দেশের অনেক মসজিদে দেখা যায় রমজান মাসে তারাবি পড়ানোর জন্য হাফেজ নিয়োগের ঘোষণা করা হয় এবং হাফেজ সাহেবদেরকে জমা করা হয় ৷ তাদের মধ্য হতে মসজিদ কমিটির সাধারণ লোক অর্থাৎ যারা আলেম নয়, এমন লোক পড়া-শুনা কণ্ঠস্বর ইত্যাদি দেখে, যার ব্যাপারে বেশি লোক রায় দেয় তাকে নির্বাচন করে থাকে ৷
এখন আমার প্রশ্ন হল,
(ক) এই ভাবে হাফেজ নির্বাচন বা ইমাম নিযুক্ত করা সহি আছে কি -না?
(খ) এবং হাফেজে কোরআনের জন্য এরূপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা বৈধ হবে কি-না?
উত্তর: উক্ত পদ্ধতিতে হাফেজ নিযুক্ত করা সমীচীন নয় কারণ ৷ এভাবে জিম্মাদার নিয়োগ করার প্রচলন ইসলামের সোনালী যুগে ছিল না ৷ তাছাড়া এরদ্বারা হাফেজে কুরআনদের অবমাননা হয় ৷ এভাবে জিম্মাদার নিয়োগের এই গণতান্ত্রিক নিয়ম সর্বপ্রথম ইংরেজরা আবিষ্কার করেছে এবং ক্ষমতা বলে বা কৌশলে তা সর্বোচ্চ চালু করেছে ৷ আর জনগণ দ্বীনি ব্যাপারে অজ্ঞ থাকার কারণে ইংরেজ ও ব্রিটিশদের অন্ধ অনুকরণে লিপ্ত হয়ে অফিস-আদালতের গণ্ডি পার হয়ে মসজিদ-মাদ্রাসায় ও তা জারী করতে শুরু করেছে ৷ এ ব্যাপারে সহি পদ্ধতি হলো, হক্কানী ওলামাদের মাধ্যমে যিম্মাদার নিয়োগ করা বা যেসব স্থানে হাফেজ আলেম তৈরি হয় সেখানে গিয়ে তাদের পড়াশুনা জেনে সেখানের উস্তাদদের থেকে লোক নেওয়া ৷ এর নজির সাহাবায়ে কেরামের জামানায় বহু রয়েছে ৷ আর ঐ জামানায় খলিফা থেকে শুরু করে পাহারাদার নিযুক্ত করা পর্যন্ত কাউকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিযুক্ত করা হতো না ৷ বরং বিজ্ঞ লোকদের পরামর্শের মাধ্যমে জিম্মাদার নিয়োগ করা হত ৷
(খ) কোন ইমাম বা হাফেজের জন্য উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা উচিত হবে না ৷ কেননা এতে কুরআন ও নিজের অবমাননা হয় ৷ কোরআনের অবমাননা করা, এমনি ভাবে নিজেকে অপমান করা শরীয়তে নিষেধ ৷
সূত্র: সূরায়ে আনআম: 116
তিরমিজি শরীফ: হাদিস নং 2254
ইবনে মাজাহ শরীফ: হাদিস 4016
মিশকাত শরীফ: দ্বিতীয় খন্ড: পৃষ্ঠা 469
COMMENTS